দেশের নাগরিকত্বের প্রমাণ কিংবা বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথির মধ্যে অন্যতম পাসপোর্ট। অথচ ভুয়া নথি কিংবা ভুল ঠিকানা দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে পাসপোর্ট তৈরি চক্র গড়ে উঠেছে ভারতের কলকাতায়। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভুয়া নথি দিয়েই কলকাতায় তৈরি হয়েছে ১৩০টি পাসপোর্ট। এদের মধ্যে ১২০টিই বাংলাদেশিদের।
আলিপুর আদালতে ১৪০ পৃষ্ঠার চার্জশিট জমা দিয়েছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। কলকাতা পুলিশের দেওয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুয়া পাসপোর্ট মামলায় ১৩০ জন অভিযুক্তের নাম রয়েছে। কলকাতার পার্ক স্ট্রিট, নিউ মার্কেটসহ একাধিক থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশি নাগরিক। যদিও ওই ১৩০ জনের মধ্যে ১২০ জন বাংলাদেশি নাগরিক পলাতক রয়েছেন বলেও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ভুয়া নথিতে পাসপোর্ট পাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকরা হলেন- আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, যারা গণঅভ্যুত্থানের পর বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হয়ে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে গেছেন। এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, সরকারি কর্মচারী, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী বা এজেন্ট কর্তৃক বিশ্বাস ভঙ্গ এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পাশাপাশি পাসপোর্ট আইন ও বিদেশি আইনের অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকা কাজে লাগিয়ে বর্তমানে ভারতের পাসপোর্ট পেতে মরিয়া আওয়ামী এই নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর থানায় ভুা নথি জমা দিয়ে আসল পাসপোর্ট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। তদন্তে বিশেষ দলও গঠন করা হয়। অভিযোগ ছিল, উৎপল মাহাতো, উদয় মাহাতোসহ মোট ৩৭ জনের বিরুদ্ধে। তদন্তে নেমে বিভিন্ন নথির সত্যতা যাচাই করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তদন্তকারীরা।
জানা গেছে, পাসপোর্ট করতে ব্যবহার করা প্রায় সব নথিই জাল। এরপর কলকাতা লাগোয়া পঞ্চসায়র ডাকঘরে তল্লাশি চালিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ভুয়া পাসপোর্ট তৈরির পেছনে রয়েছে সংগঠিত চক্র। ভুয়া নথি তৈরি করা থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন-এর সব কিছুর জন্য রয়েছে আলাদা রেট। ঘটনার তদন্তে নেমে ভারতের গোয়েন্দা ব্যুরোর (ডিআইবি) এক সদ্য অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে আট জন এখনো জেলবন্দি।
আপনার মতামত লিখুন :