চীনের উত্থান ভারতের নেতা হওয়ার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে


আজকের দেশ ২৪ প্রকাশের সময় : মার্চ ১৭, ২০২৫, ২:৩৫ অপরাহ্ণ /
চীনের উত্থান ভারতের নেতা হওয়ার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে

প্রভাবশালী অর্থনৈতিক ও কৌশলগত শক্তি হিসেবে চীনের উত্থান ভারতের গ্লোবাল সাউথের নেতা হওয়ার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী।

তার মতে, ভবিষ্যতের শক্তি কেন্দ্র হিসেবে আফ্রিকার সম্ভাবনার দিকে নজর দেওয়া উচিত ভারতের। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে রোববার (১৬ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

দিল্লিতে চতুর্থ জেনারেল বিপিন রাওয়াত স্মারক বক্তৃতায় জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “চীনের প্রভাবশালী অর্থনৈতিক ও কৌশলগত শক্তি হিসেবে উত্থান জটিলতা বৃদ্ধি করছে, প্রতিযোগিতা তৈরি করছে এবং গ্লোবাল সাউথের স্বাভাবিক নেতা হওয়ার পথে ভারতের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে।”

ভারতীয় এই সেনাপ্রধান গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ভারত যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে সেগুলোও তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক পরিবর্তন এবং সম্পদ নিয়ন্ত্রণের প্রতিযোগিতার সাথে সাথে আমাদের ভবিষ্যতের শক্তি কেন্দ্র হিসাবে আফ্রিকার সম্ভাবনাগুলো দেখতে হবে… ভূগোল, জনসংখ্যা, গণতন্ত্র, সমৃদ্ধি, সফট পাওয়ার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির কারণে ভারতের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ থাকবে… বৃহত্তম জনসংখ্যা, বৃহত্তম গণতন্ত্র, সপ্তম বৃহত্তম ভূখণ্ড এবং ভূ-কৌশলগত অবস্থান থাকা সত্ত্বেও ভারত তুলনামূলকভাবে নিম্ন বৈশ্বিক অবস্থানে রয়ে গেছে।”

জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “আমাদের বারবার অবরুদ্ধ করা হয়েছে, যার ফলে আমাদের সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা খুব কম। এমনকি ব্রিকসও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে… শক্তিশালী মার্কিন ডলারকে উল্টে দেওয়ার জন্য এর কথিত প্রচেষ্টা ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে প্রকাশ্যেই ধাক্কা খেয়েছে। এর আলোকে আমাদের এসসিও (সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা) ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।”

তিনি জাতীয় নিরাপত্তায় উদীয়মান প্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রতিরোধের নতুন রেওয়াজ হয়ে উঠেছে এবং বাণিজ্য ও নিরাপত্তার নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে তথ্য।

জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “নিরাপত্তা হলো যুদ্ধ পরিচালনা এবং যুদ্ধ প্রতিরোধের স্বাস্থ্যকর ক্ষমতা। স্বাস্থ্যকর সামরিক-বেসামরিক সমন্বয়, আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা শিল্প ভিত্তি, জাতীয় পর্যায়ে দ্বৈত-ব্যবহারের সম্পদ, সময় কাঠামোর সু-জ্ঞাত এবং ক্ষমতাপ্রাপ্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী এবং নাগরিক যোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।”

জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সংস্কার আনুন যাতে গ্লোবাল সাউথের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত হবে। আলোচক বা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সংঘাত নিরসনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করুন। মানবিক কারণে বিশ্বজুড়ে ভারতীয় প্রবাসীদের ইতিবাচক শক্তিকে কাজে লাগান। বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করুন, গ্লোবাল সাউথের উত্থানকে সক্ষম করুন, উন্নত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য দরিদ্রদের সাথে অতিরিক্ত সম্পদ ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিন।”

তিনি আরও বলেন, “শান্তিরক্ষা অভিযানের নেতৃত্ব দিন, যতক্ষণ সম্ভব প্রতিরোধমূলক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক অস্ত্রকে রাজনৈতিক সম্পদ হিসেবে সমর্থন করুন, উত্তর-পূর্ব ভারতে বামপন্থি চরমপন্থার বিরুদ্ধে ও জম্মু-কাশ্মিরে জিডব্লিউওটি (সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ) পরিচালনা করুন; আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই যে— ভারতীয় সেনাবাহিনী জাতির সাথে একত্রিত এবং সংহত থাকবে।”