দুর্নীতির মহারাজা এলএ শাখার কানুনগো বেলাল


আজকের দেশ ২৪ প্রকাশের সময় : মার্চ ১৭, ২০২৫, ২:৪৩ অপরাহ্ণ /
দুর্নীতির মহারাজা এলএ শাখার কানুনগো বেলাল

ঢাকা ডিসি অফিসের এল এ  শাখার  কানুনগো বেলাল দালাল ও তার সহযোগীদের সাথে আতাত করে ভুয়া বিল ভাউচারসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঢাকা ডিসি অফিসের কানুনগো মোঃ বেলাল হোসেন দীর্ঘদিন যাবৎ একই স্থানে থাকার সুবাদে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব দালাল সিন্ডিকেট। তার অন্যতম সহযোগী ডিসি অফিসের এলএ শাখার সার্ভেয়ার হাফিজ, ও এলএ সার্ভেয়ার নাঈম এবং দালাল মোস্তফা কামাল, কফিল উদ্দিন, স্বপন সরকারসহ নাম না জানা আরো অনেকেই। কানুনগো বেলালের নেতৃত্বে অফিস কেন্দ্রীক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা নামজারি,আপিল,তদন্ত সহ সব কাজে অতিরিক্ত টাকার লোভে জমির পক্ষে বিপক্ষে তত্ত্ব ফাঁশ করে খতিয়ানের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে। ঢাকা ডিসি অফিসে সেবা নিতে আসা নিরীহ জনসাধারণ ভূমিসংক্রান্ত সেবা পেতে নানা রকম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা সেবার নামে গরীব জনসাধারণের পকেট কাটছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। ভূমি আইন বিরোধী অনৈতিক কর্মকান্ডে অসাধু চক্রটি তাদের অপকর্ম চালিয়ে গেলেও উবর্ধতন কতৃপক্ষ নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অসাধু চক্রটির কাছে জিম্মি হয়ে গরীব ও নিন্মবিত্তদের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো বছরের পর বছর আটকা পড়ে থাকছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভূমি সেবাপ্রার্থীর অভিযোগ, নামজারি মামলা,আপিল,জমি সংক্রান্ত তদন্ত, ডিসি আর ও দাখিলায় ঘুষের রেট আগের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। কানুনগো, সার্ভেয়ার ও দালালরা পুরো অফিসকে দূর্নীতির আখড়া বানিয়ে রেখেছেন।

তাদের দুর্নীতির মাত্রা আস্তে আস্তে উপরের দিকে ধাবিত হওয়ার একপর্যায়ে ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন -৬) মেট্রোরেল উন্নয়ন প্রকল্প উত্তরা উত্তরের স্টেশন প্লাজা নির্মাণ প্রকল্পের এল এ কেস নং ০৩.১৫.০৯/২০২৩,২০২৪  যার মৌজা দিয়াবাড়ি। সিটি দাগ নং-  ২০৩৪.২০৪৬.২০৭১.২০৭২.২০৫৩.২০৫৫.৩৫০৭.৩৫০৯ এবং ওয়াসার উত্তরা এলাকায় পয় শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য নলভোগ ও ধউর মৌজায় এল এ কেস নম্বর ২/২০২১.২০২২ ডিসি অফিসের এল এ শাখায় কর্মরত কানুন গো বেলাল, সার্ভেয়ার এল এ হাফিজ ও নাঈমের সহযোগিতায় একটি চিহ্নিত দালাল চক্র মোস্তফা কামাল, কফিল উদ্দিন, স্বপন সরকার উক্ত প্রকল্পের অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণ বাবদ অতিরিক্ত মাত্রায় মূল্যবৃদ্ধি দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন। যে কারণে এক বছর যাবত যাচাই-বাছাই করে উক্ত প্রকল্পে ক্ষতিপূরণ বাবদ অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় পুনরায় তদন্তের জন্য গণপূর্ত বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রতারক মোস্তফা কামাল ও তার পরিবার এবং উক্ত সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য স্বপন সরকার ও কফিলুদ্দিনের নামে দিয়াবাড়ি মৌজায় সিটি জরিপ -২০৩৪ ও ২০৪০ নম্বর দাগে এল এ শাখায় কর্মরত কানুনগো ও সার্ভেয়ারের সহযোগিতায় জমি ক্রয় করে নামমাত্র স্থাপনা দেখায় একতা এ্যাড নামে একটি কোম্পানি  যার প্রোপাইটার মোস্তফা কামাল। সেখানে কয়েকটি রড দাঁড় করিয়ে ডিসি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় যৌথ তদন্ত তালিকায় ৫০ x ৩৩ বিলবোর্ড দেখিয়ে অস্বাভাবিক হারে বিল তৈরি করেন। উল্লেখ্য যে, জমির মূল্য বেশি পাওয়ার জন্য উচ্চ মূল্যে ভিটি শ্রেণীর একাধিক দলিল রেজিস্ট্রি করে এবং তাদের ক্রয়কৃত জমিতে ভূয়া স্থাপনা দেখিয়ে যৌথ তদন্ত তালিকায় ভিটি শ্রেণীর জমি হিসেবে লিপিবদ্ধ করে সরকারি কোষাগার থেকে অতিরিক্ত প্রায় ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অসাধু এই চক্রটি । এভাবে পরিকল্পিতভাবে মূল্য বাড়িয়ে প্রকল্পের সময় দীর্ঘায়িত করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই চক্রটি।

বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও ঘুষবাণিজ্যের সত্যতা জানতে ঢাকা ডিসি অফিসের এল এ শাখার কানুনগো মোঃ বেলালের অফিসে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি ‘দৈনিক সকালের সময়’কে বলেন,আপনারা আসার আগেই এ যাবত আরো ২২ জন সাংবাদিক আমার কাছে এসেছেন। এমনকি ডিসি অফিসের এল এ শাখা থেকে চলে আসার পর কানুনগো বেলাল সকালের সময়’র ওই  রিপোর্টারের হোয়াটসঅ্যাপে যে কোন একটি পত্রিকার ভিজিটিং কার্ড পাঠিয়ে দেন।