পৃথিবীতে সব মানুষেরই ভাষা আছে। সে আমরা বুঝি আর নাই বুঝি। মানুষের মতো ভাষা আছে প্রাণিরও। আমরা তাদের কথা না বুঝতে পারলেও সেটাও ভাষা। কেমন হতো যদি একদিন প্রাণীরাও মানুষের ভাষা বুঝতে পারতো অথবা মানুষ বুঝবে প্রাণীর ভাষা! ধরো, তুমি যদি কোনো প্রাণীকে আঘাত করো, তাহলে প্রাণীটি রেগে গিয়ে তোমাকে যা বলছে সেটি তো আর আমরা এখন বুঝতে পারছি না। যদি বুঝতে পারতাম! তাহলে বুঝতাম সেই প্রাণীটি তোমার আঘাতে কি পরিমাণ ব্যাথা পেয়েছে! এরপর নিশ্চয়ই আমরা আর আঘাত করতাম না। তোমার বাড়ির পোষা বিড়ালটার ভাষা যদি বুঝতে! এরকম কথা আমাদের প্রায়ই মনে হয়। শিগগিরই মানুষের যোগাযোগ স্থাপিত হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আজ পর্যন্ত বিজ্ঞান অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছে। এটাও পারবে। আমরা বিভিন্ন কার্টুনে প্রাণিদের কথা বলতে দেখি। মানুষের সাথে দিব্ব্যি বিড়াল, কুকুর বা হাতি মানুষের ভাষা কথা বলছে। বিষয়টি অবাক হলেও বিজ্ঞান হয়তো একদিন এসব সত্যি করে তুলবে। কারণ তারও তো কথা বলছে। শুধু মানুষ বুঝতে পারছে না। তবে আর কিছুদিনের মধ্যেই মানুষ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) সাহায্যে মৌমাছি, হাতি ও তিমি মাছের কথা বুঝতে পারবে। ২০২২ সালে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার কারেন বেকার ভক্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, জার্মানির একদল গবেষক এআই ব্যবহার করে অন্যান্য প্রাণীদের শব্দ সৃষ্টির প্যাটার্নগুলো ধরার চেষ্টা করছেন। যেমন মৌমাছিদের উড়াউড়ি, হাতিদের তৈরি করা নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ ইত্যাদি ডিকোড করার চেষ্টা করছেন তারা। এগুলো বুঝতে পারলে মানুষ শুধু তাদের কথাই বুঝতে পারবে না, বরং প্রাণীগুলোকে নিয়ন্ত্রণেও সক্ষম হবে। ‘দ্য সাউন্ডস অব লাইফ: হাউ ডিজিটাল টেকনোলজিস আর ব্রিংগিং আজ ক্লোজার টু দ্য ওয়ার্ল্ডস অব অ্যানিমেলস অ্যান্ড প্ল্যানেটস’ বইয়ের লেখক কারেন বেকার বলেন, জার্মানের বিজ্ঞানীরা এখন বিভিন্ন মৌমাছির চাকে বিভিন্ন ধরলের এআই রোবট স্থাপন করে দেখবে তারা সেগুলো গ্রহণ করে কি না। ফলে শিগগিরই মানুষের যোগাযোগ স্থাপিত হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের সাথে যোগাযোগ সবচেয়ে বেশি যে প্রাণীর তার মধ্যে অন্যতম হলো ডলফিন। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন ডলফিনের ভাষা আছে! ওরা নিজেদের মধ্যে ভাষার ব্যবহার করতে পারে। শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি। ২০১৭ সালে সুইডেনের একদল বিজ্ঞানী গবেষণার ভিত্তিতে জানান যে, ২০২১ সালের মধ্যেই ডলফিনের ভাষা বুঝতে পারবে মানুষ। যদিও এখনও তা পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। তাঁরা ডলফিনের ভাষা বিশ্লেষণের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন। তবে মানুষ এখন অন্য সব প্রাণির ভাষা বোঝার চেষ্টা করছে। নিরন্তর গবেষণা করে চলেছে। বর্তমানে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে মানুষ প্রাণীর ভাষা বোঝার চেষ্টা করছে। একদিন যদি দেখো তোমার গাছে বসে ডাকাডাকি করা পাখিটির ভাষা বুঝতে পারছো তাহলে নিশ্চয়ই তুমি খুব খুশি হবে! আমরা বরং সেদিনের অপেক্ষায় থাকি।
আপনার মতামত লিখুন :