যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় ‘বিপর্যয়কর’ ক্ষুধা সঙ্কট : ডব্লিউএইচও প্রধান


আজকের দেশ ২৪ প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় ‘বিপর্যয়কর’ ক্ষুধা সঙ্কট : ডব্লিউএইচও প্রধান

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দুই সপ্তাহ পরেও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ভয়াবহ ক্ষুধা সঙ্কট চলছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এদিকে আন্তর্জাতিক সাহায্য গোষ্ঠীগুলো ইসরাইলকে মানবিক সরবরাহের ওপর অবরোধ তুলে নেয়ার দাবি জানিয়েছে।বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো ঘোষণা করেছে, গাজায় প্রবেশ করা ত্রাণ সেখানে বসবাসকারী মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছে না। অন্যদিকে জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, গাজায় ত্রাণ সরবরাহ এখনো তার দৈনিক লক্ষ্যমাত্রা দুই হাজার টনের চেয়েও অনেক কম। কারণ, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মাত্র দুটি ক্রসিং খোলা রয়েছে।

ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস বলেছেন, ‘পরিস্থিতি এখনো বিপর্যয়কর রয়ে গেছে। কারণ যা প্রবেশ করছে তা যথেষ্ট নয়। পর্যাপ্ত খাবার না থাকায় ক্ষুধার পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।’

এর আগে, বুধবার জাতিসঙ্ঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজার জনসংখ্যার কমপক্ষে এক-চতুর্থাংশ অনাহারে আছেন। যার মধ্যে ১১ হাজার ৫০০ গর্ভবতী নারীও রয়েছেন। এই ক্ষুধা সঙ্কট গাজার ‘প্রজন্মের ওপর’ দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে।

জাতিসঙ্ঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) উপনির্বাহী পরিচালক অ্যান্ড্রু সাবার্টন বুধবার বলেন, গাজার ৭০ শতাংশ নবজাতকই সময়ের আগে অথবা কম ওজন নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরের আগে এই হার ছিল ২০ শতাংশ।

তিনি আরো বলেন, ‘অপুষ্টির প্রভাব প্রজন্মের পর প্রজন্মের ওপর পড়বে। এই প্রভাব মায়ের ওপর নয়, বরং নবজাতকের ওপর পড়বে। যার ফলে শিশুর দীর্ঘস্থায়ী যত্ন প্রয়োজন হতে পারে ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।’

গত আগস্ট মাসে গাজা সিটি ও এর আশপাশের এলাকায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছিল। সে সময় খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইপিসি বলেছিল, গাজা উপত্যকার পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ ‘বিপর্যয়কর পরিস্থিতির’ মুখোমুখি হয়েছে।

ফিলিস্তিনি এনজিও পিএআরসি-র বিদেশী সম্পর্কবিষয়ক পরিচালক বাহা জাকউত বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ পরেও গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি ভয়াবহ রয়ে গেছে।’

জাকাউত উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, বাণিজ্যিক ট্রাকে বিস্কুট, চকলেট ও সোডা প্রবেশের অনুমতি থাকলেও বীজ ও জলপাইয়ের মতো পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, এগুলো শিশু, নারী ও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। কিছু ফল ও শাকসবজি গাজায় প্রবেশ করলেও, সেগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল।’

বৃহস্পতিবার অক্সফাম ও নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলসহ ৪১টি মানবাধিকার সংস্থা এক খোলা চিঠিতে অভিযোগ করেছে, ইসরাইল গাজায় ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ ত্রাণ সরবরাহ আটকে দিচ্ছে। মানবিক প্রচেষ্টা শুরু করার জন্য তাদের অনুরোধগুলো ইসরাইলি সরকার নিয়মিত প্রত্যাখ্যান করেছে।